হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ রজভী আজ বৃহস্পতিবার ইমাম খোমেনী (রহ.) প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা, শিক্ষক ও গবেষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, "ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বিপ্লব সেই চিরন্তন সংগ্রামের প্রতীক, যা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে শুরু হয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত চলবে। এই সংগ্রাম ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে উপস্থিত।"
তিনি বলেন, “এই পবিত্র আন্দোলন, যেভাবে কুরআনের আয়াতগুলো ইঙ্গিত দেয়, শহাদাত ও আত্মত্যাগের পথ। যে এই পথে অগ্রসর হয় না, সে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বিচ্যুত হয়।”
তিনি বিশেষভাবে আমেরিকা ও দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে ‘বিশ্ব শয়তান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “যে ব্যক্তি এই শয়তানি প্রচেষ্টার সামনে দুর্বলতা প্রকাশ করে, সে কেবল ব্যক্তি জীবনে নয়, বরং সামাজিক দায়িত্বেও বিচ্যুত হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি এখনও শত্রুর প্রকৃত চেহারা বুঝতে অক্ষম এবং মনে করেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে নিরাপত্তা ও ফল পাওয়া সম্ভব।”
তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, “যখন ট্রাম্প প্রকাশ্যে ঘোষণা করে, যদি কেউ তাদের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করে—যেমনটা সিরিয়ার ক্ষেত্রে হয়েছে—তাহলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে, আর আমাদের পক্ষ থেকে আলোচনার আগ্রহ দেখানো হয়, তাহলে এটা আল্লাহর ওয়াদায় অবিশ্বাস এবং শত্রুর ষড়যন্ত্র না বোঝার প্রকাশ।”
তিনি বলেন, “কুরআন আমাদের ধৈর্য ও আল্লাহর পথে অটল থাকার আহ্বান জানায় এবং প্রতিশ্রুতি দেয়—যে ব্যক্তি শক্ত হৃদয় নিয়ে শত্রুর ষড়যন্ত্রের সামনে দাঁড়ায়, সে নিশ্চয় বিজয়ী হবে। তাই প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব হলো ব্যক্তিজীবনে শয়তানের অনুপ্রবেশ রোধ করা এবং সামাজিক অঙ্গনে উম্মতের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।”
তিনি সুরা ফাতহের আয়াত উল্লেখ করে বলেন," নিশ্চয়ই আমার বান্দাদের ওপর তোমার (শয়তানের) কোনো কর্তৃত্ব নেই।"
তিনি বলেন, "যদি আমরা মানব বা অমানব শয়তানের ওপর ভরসা করি, তাহলে ব্যর্থ হব। কিন্তু যদি আমরা আল্লাহর ওপর আস্থা রাখি এবং বিশ্বাসে দৃঢ় থাকি, তাহলে বিজয় আমাদের হবেই। কুরআনে বহু উদাহরণ রয়েছে—যেখানে নবী ও ঈমানদাররা ধৈর্য, মর্যাদা ও অটল বিশ্বাসের মাধ্যমে বিজয় লাভ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আজকের যুগে, পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি, তরুণ প্রজন্মকে আমেরিকা ও ইসরায়েলের শত্রুতার বাস্তবতা স্পষ্টভাবে বোঝানো আবশ্যক—যাতে তারা সরল বিশ্বাস ও প্রতারণার ফাঁদ থেকে মুক্ত থাকতে পারে।”
তিনি কিছু সরকারি ব্যক্তিত্বের আমেরিকার সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “শত্রুর আচরণ ও চক্রান্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, তারা কোনো সদিচ্ছা পোষণ করে না। অতএব, তাদের সঙ্গে সংলাপ একধরনের সরলতা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং জাতির ওপর ক্ষতির বোঝা চাপানো ছাড়া আর কিছু নয়।”
বক্তব্যের শেষভাগে তিনি বলেন, “সংকটকালে আমাদের উচিত—আল্লাহর প্রতিশ্রুতি, আহলে বাইত (আ.)-এর শিক্ষাসমূহ এবং বিদ্বান নেতৃত্ব তথা ওলি-ই-ফকীহের নির্দেশনার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা। ইসলামী উম্মাহর বিজয় ও মর্যাদার একমাত্র পথ হচ্ছে—ওলামায়ে দ্বীন ও আহলে বাইতের অনুসরণে অবিচল থাকা।”
আপনার কমেন্ট